বর্তমানে অসংখ্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের ভিড়ে এই প্রশ্নটা মাথায় আসা খুবই স্বাভাবিক যে কেন আমি পাইথন শিখব? প্রকৃতপক্ষে পশ্নটা হওয়া উচিৎ ছিল কেন আমি পাইথন শিখব না! বিষয়টা এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে, সচরাচর আমরা অ্যাপ্লিকেশন লেভেলে যে সকল টুল বা সফটওয়্যার ব্যবহার করি তার অধিকাংশই পাইথন ভাষা ব্যবহার করে লেখা। পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে প্রতিদিনই এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। চলুন দেখে নেয়া যাক এর পিছনের কারণগুলো কি কি –

কোডের পাঠযোগ্যতা (Code Readability)

পাইথনের সিনট্যাক্স (syntax) অন্যান্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের মত জটিল নয়, অধিকন্তু এটি সাধারণ কথ্য ভাষার কাছাকাছি যা সহজেই বোধগম্য। তাছাড়া পাইথনের অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড এবং ফাংশনাল প্রোগ্রামিং ব্যবহার করার কারণে কোড পুনঃব্যবহার (code re-usability) অনেক সহজ।

ক্রস-প্ল্যাটফর্ম (Cross platform)

পাইথন প্ল্যাটফর্ম ইন্ডিপেন্ডেন্ট (platform independent) অর্থাৎ যেকোন অপারেটিং সিস্টেমেই (উইন্ডোজ, লিনাক্স, ম্যাক) কাজ করে, এর জন্য কোডের কোন পরিবর্তন আনার দরকার নেই। এটা ডেভেলপারদের জন্য খুবই সহায়ক। পাইথন এর একই কোড একাধিক প্ল্যাটফর্ম এ রান করার অনুমতি দেয় । তাই অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে আপনাকে কখনো কোনো সমস্যাতে পড়তে হবে না ।

লাইব্রেরি সাপোর্ট (Library support)

পাইথনের আছে সমৃদ্ধ বিল্ট-ইন লাইব্রেরি (Built-in library)। যেকোন ধরনের সাধারন প্রোগ্রাম থেকে শুরু করে সিস্টেম প্রোগ্রামিং বা সকেট প্রোগ্রামিং এর ক্ষেত্রেও পাইথনের স্ট্যান্ডার্ড লাইব্রেরির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যার ফলে আপনি অনেক সহজেই এডভান্স লেভেল এর প্রোগ্রাম করতে পারবেন । দিনের পর দিন এই লাইব্রেরি এবং টুলস এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে পাইথন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজটি আরো শক্তিশালী এবং আরো বেশি ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠছে । তাছাড়া পাইথনের লিস্ট বা সেট এর মত অতিরিক্ত ডাটা স্ট্রাকচার যেকোন জটিল সমস্যা সমাধান করার জন্য খুবই উপকারি।

পর্যাপ্ত ওপেনসোর্স ফ্রেমওয়ার্ক (Robust opensource framework)

পাইথন ওপেনসোর্স ল্যাংগুয়েজ হওয়ার ফলে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর খরচ কমাতে অনেক সাহায্য করে । পাইথনের প্রচুর ওপেনসোর্স ফ্রেমওয়ার্ক রয়েছে। যারা ডাটা সাইন্স , মেশিন লার্নিং বা ডিপ লার্নিং নিয়ে কাজ করে তাদের জন্য তো পাইথন অপরিহার্য একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ।

টেনসরফ্লো (TensorFlow), কেরাস (Keras), সাইকিট (Scikit), পাইটর্চ (PyTorch) সবগুলো ফ্রেমওয়ার্ক ই পাইথনে কাজ করে। আর এই সকল ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে আপনি মেশিন লার্নিং বা ডিপ লার্নিং সহজ এবং আরো গতিশীল করে তুলতে পারবেন ।

ডেভেলপার প্রোডাক্টিভিটি (Developer productivity)

পাইথনে অন্যান্য সমসাময়িক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের চেয়ে অনেক কম কোড (Code) লেখার প্রয়োজন পড়ে। অর্থাৎ খুব কম সময়ে শুধুমাত্র লাইব্রেরি ব্যবহার করেই অনেক জটিল সফটওয়্যার তৈরি করা যার যা সময় বাঁচায়, সাথে সাথে ভুল বা বাগ (Bug) হবার সম্ভাবনাও কমে যায়।

ক্যারিয়ার গঠন

পাইথন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের রয়েছে বিশাল পরিসরে ক্যারিয়ার গঠন করার সুযোগ । একটি প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়েই সবকিছু করে ফেলা যায়। তাই একবার দক্ষ হয়ে গেলে যেকোন দিকে সহজেই ক্যারিয়ার গঠন করা যায়। আপনি চাইলেই ডেটা এনাল্যাইসিস, ডেটা ভিজুলাইজেশন , মেশিন লার্নিং , সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, অটোমেশন/স্ক্রিপ্টিং, এআই ডেভেলপমেন্ট , গেম ডেভেলপমেন্ট  এবং আরো অনেক কাজ করতে পারবেন ।

উপরে আমরা পাইথনের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও পাইথনের আছে বহুল ব্যবহার।

0 0 votes
Article Rating
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x